আসুন “সুখ” তৈরি করি! | Creating happiness tips and tricks.
এটা আবার কেমন কথা? সুখ কি তৈরি করা যায়? অনেকেই ভাবে আমার জন্মই হয়েছে দুঃখ পাবার জন্য।আসল কথা হচ্ছে পৃথিবীতে কেওই চরম সুখী বা চরম দুখী হয়ে জন্মায়
নি। মানুষ চাইলেই তার জীবনে সুখগুলো তৈরি করতে পারে।
হেলেন কেলারের একটি কথা আছে, “সুখ আপনি আসে না, একে তৈরি করে নিতে হয়। “
আসুন তাহলে সুখ তৈরি করার কিছু কৌশল
জেনে নেই-
১. মানুষের সাথে সম্পর্কের গুরুত্ব দিন ( Give importance to relationships) -
আত্নীয় সজনদের বাসায় যেতে বিরক্ত লাগে? তাদের ঘ্যান ঘ্যান অসহ্য লাগে? রুমের দরজা বন্ধ করে একা একা থাকতে বেশি ভালো লাগে? তাহলে শুনুন দীর্ঘ
মেয়াদে আপনি একজন অসুখী মানুষে পরিণত হবেন।
গবেষণাও বলছে একই কথা । আমেরিকার
ইলিনর বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক ৩০ বছর ধরে ২০ হাজার মানুষের মাঝে গবেষণা করে দেখেছে,
একা থাকা মানুষের চাইতে সে মানুসগুলো বেশি
সুখী যাদের সম্পর্কগুলো দীর্ঘস্থায়ী ও আনন্দময়।
ফটো ক্রেডিট shutterstock.com |
পরিবার, বন্ধু, সহকর্মী, প্রতিবেশীদের সাথে
সম্পর্ককে জীবনে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিন। এটা হচ্ছে কোটি টাকার সম্পদ। আপনি হয়ত সারা
জীবনে কোটি টাকা জমাতে পারবেন না, কিন্তু একটি কঠিন অসুখে এই মানুষ গুলো
আপনাকে কোটি টাকার সাহায্য করবে। সম্পর্ক রাখতে গিয়ে হয়ত সাময়িক কিছুটা বিরক্ত হতে
হয়, সময় দিতে হয় । কিন্তু দীর্ঘ জীবনে এই সম্পর্ক গুলো আপনাকে মানসিক নিরাপত্তা দিবে।
আপনি মনে সুখ অনুভব করবেন।
সুতরাং, সুখী হতে চাইলে সম্পর্ক গুলোর মূল্যায়ন করুন।
তাদের সাথে মিশুন, তাদেরকে সময় দিন।
আরো পড়ুন-
তাদের সাথে মিশুন, তাদেরকে সময় দিন।
আরো পড়ুন-
২. ভিন্ন কিছু করুন ( Do something different and enjoy the life):
এই ব্যস্ত জীবনে মানুষকে সারাটা ক্ষণ
দৌড়াতে হয়। রুটিনের বাইরে এক পাও ফেলা সম্ভব নয়।
কিন্তু, গবেষনায় বলছে যারা
নিজেদের প্রতিদিনের রুটিন থেকে একটু ভিন্ন কিছু কাজ করে, তারা মানসিক দিক দিয়ে বেশি সুখী হয়। এর মানে এই নয় যে সারাক্ষণ নিজের মন মত চলবেন। জীবনে
অবশ্যই একটা রুটিন মেনে চলবেন। তবে দিনের কিছুটা সময় রাখুন যখন মনের যা ইচ্ছা করবে
তাই করুন।
যেমন- অফিস থেকে ফেরার পথে ভিন্ন কোন
রাস্তা দিয়ে হেটে আসুন, নতুন কোন মানুষের সাথে পরিচিত হওন, অনেক পুরন কোন বন্ধুকে ফোন দিন, নতুন কোন গাছ লাগান,
সপ্তাহে নতুন কোন জায়গায় বেড়িয়ে আসুন।
নিজেকে মেলে ধরুন। এই কাজগুলো কিন্তু
আপনার আত্ন-বিশ্বাস অনেক বাড়িয়ে দিবে। আপনার
মনে একটা সুখের অনুভূতি তৈরি করবে।
৩. অন্যের জন্য ব্যয় করুন (Spend for others)-
আমরা এক ভোগবাদী সমাজে বাস করছি। কিছু
টাকা জমলেই কোন একটা রেস্টুরেন্ট এ যেয়ে খেয়ে আসি ,আর সেই ছবি ফেসবুকে দিয়ে বলি, felling
awesome! বা শপিং এ যেয়ে নিজের জন্য আরেকটা ড্রেস বা জামা কিনে ফেলি। বিভিন্ন দিবসে
একটা নির্দিষ্ট রঙের জামা কিনি। সবকিছুই নিজের জন্য। এতে হয়ত সাময়িক একটা আনন্দ পাওয়া
যায়। তবে এই আনন্দ খুব একটা দীর্ঘস্থায়ী হয় না।
বরং এই টাকাটা যদি অন্যের জন্য খরচ করেন
তবে আপনি কিন্তু নিজের জন্য অনেক বেশি সুখ কিনতে পারবেন।
বিশেষ দিবসে অনেক টাকা খরচ করে জামা
না কিনে সে টাকা দিয়ে কিছু গরীব বাচ্চাকে একবেলা খাবার খাওয়ান, বাবা-মা কে ছোট একটা উপহার দিন, কোন বন্ধুকে একটা সারপ্রাইজ গিফট দিন, গরিব কোন আত্নীয় বা পরিচিতকে কিছু টাকা পাঠিয়ে দিন। অথবা যেটা খেতে ইচ্ছে
করছে সেটা বেশি করে কিনে কোন আত্নীয়ের বাসায়
চলে যান, আর জম্পেশ একটা আড্ডা
দিন। দেখবেন সুখ কাকে বলে!
৩. ইতিবাচক দৃস্টিভঙ্গী তৈরি করুন ( Create a positive attitude)-
জীবনে কিছু নাই? টাকা নাই, প্রেমিক/ প্রেমিকা নাই, রূপ নাই, ভালো বাড়ি নাই, গাড়ি নাই, জগত সংসারে আপনার কোন দাম নাই?!
আসুন, তাহলে একটা খেলা খেলি। প্রতিদিন খাতা কলম নিয়ে একটা তালিকা করে ফেলুন। তালিকায় রাখবেন, “আপনার কি আছে?”
হাসপাতালে থাকা মানুসগুলোর কথা
ভাবুন , আর আপনার তালিকাতে যোগ করুন- আপনার হাত-পা আছে, চোখ আছে, অত্যন্ত নিশ্বাসটা তো নিতে পারেন স্বাভাবিক
ভাবে! যে মানুষটা ICU তে লাখ লাখ টাকা দিয়ে
অক্সিজেন কিনে নিঃশ্বাস নিচ্ছে, তার কাছে আপনি একজন কোটিপতি ।
এবার এতিম খানায় কথা চিন্তা করুন - কি
আছে তার তালিকায় লিখুন- বাবা – মা আছে।এটা যে কত বড় সম্পদ তা তখন বুঝবেন যখন এদের কেও একজন
আপনার জীবনে থাকবে না।
আপনার বাসায় একদিনের খাবার আর থাকার
জায়গা থাকলে আপনি পৃথিবীর ৬০ ভাগ মানুষের চাইতে বেশি ধনী।
এইবার তালিকাটা পরুন। আর সৃষ্টি কর্তাকে
বেশি করে ধন্যবাদ দিন। দেখবেন মনের ভিতর কেমন সুখ তৈরি হয়েছে।
৪. পানি পান করুন (Drink plenty of water)-
গবেষণায় এসেছে, পানিশূন্যতা, পানির অভাব মানুষের মনের উপর প্রভাব ফেলে। মানুষকে বিষাদগ্রস্ত
করে, মানুষের মনে অবসাদ তৈরি করে। বিশেষ করে
এটা মহিলাদের ক্ষেত্রে বেশি ঘটে।
ফটো ক্রেডিট shutterstock.com |
হঠাৎ প্রচুর কাজের চাপ এসে পরেছে? একটু বসুন,এক গ্লাস পানি খান, জোরে দম নিন। দেখবেন একটু শান্তি পাচ্ছেন।
কারো উপর অনেক রাগ হচ্ছে? বসুন,
এক গ্লাস পানি খান। দেখবেন রাগটা কমে আসছ!
এজন্য বেশি করে সুখ পান করুন, দুঃখিত পানি পান করুন। সুখে থাকুন।
৫। সৃষ্টি কর্তার উপর বিশ্বাস রাখুন(Trust on creator) -
কেও আপনার কস্টগুলো বুঝে না? এক কাজ
করুন না? যিনি এই কষ্ট আর সুখের সৃষ্টি করেছে তাকেই নাহয় বলুন মনের কষ্ট গুলো সব
নিয়ে যেতে আর সুখ গুলো এনে দিতে। কেও আপনার কষ্ট, চাপা কান্না, বালিশ ভেজান রাত
গুলোর খোজ নিবে না। কিন্তু একজন কিন্তু কান পেতে আছে আপনার চাওয়া গুলো শুনতে।
প্রতিদিন অল্প একটু সময় সেই সৃস্টিকর্তা কে দিন না! আর নিজের জন্য সুখ গুলোকে তার
কাছ থেকে চেয়ে নিয়ে আসুন!!
জীবনকে একটু ভিন্ন ভাবে দেখুন,
নিজের সুখগুলো নিজেই তৈরী করুন।
আরো পড়
No comments