মাত্র ৫ টি কৌশলে বাড়ান কাজের গতি?


work fast


আধুনিক ব্যস্ত জীবনে উন্নতি করার জন্য কঠিন পরিশ্রম করা ছাড়া কোন উপায় নেই। তারপরও সারাদিন ঘর, সংসার, চাকুরী, সামাজিকতা, বাচ্চা-কাচ্চা সামলাতে সামলাতে দিন শেষে মনে হয় কত কাজই তো বাকি রয়ে গেছে। তখন মনে হয় ইস যদি আরো দ্রুত কাজ করতে পারতাম।
আমাদের জীবনে এখন অনেক লক্ষ্য কিন্তু লক্ষ্য গুলো অর্জন করা তখনই সহজ হবে যখন আপনি আপনার কাজের গতি আরো বাড়াতে পারবেন তবে কাজের গতি বাড়ান কিন্তু খুব একটা কঠিন নয়। কিছু বাড়তি কৌশল গ্রহণ  করলেই আপনি আপনার কাজের গতি বাড়াতে পারেন কয়েক গুন।
আসুন জেনে নেই এই কৌশলগুলো-


.প্রতিদিনের একটি রুটিন  তৈরি করুন এবং শক্ত ভাবে তা মেনে চলুন।
অনেক সময় দেখা যায়আমি এখন কোন কাজটি করব?’ এটা ভাবতে ভাবতেই অনেক বড় একটা  সময় চলে যায়। এজন্য নিজের প্রতিদিনের একটি রুটিন তৈরি করুন এবং তা মেনে চলুন।
 যেমন,  আপনি সকালে কখন ঘুম থেকে উঠবেন তা অন্তর্ভুক্ত করুন আপনার কর্ম তালিকায়। আপনি যদি ঠিক করেন প্রতিদিন ভোর পাঁচটা বাজে উঠবেন তবে ঠিক সে সময় ঘুম থেকে উঠার অভ্যাস করুন।
কারণ ভোরে উঠলে প্রায় ঘণ্টা আপনি  নিরিবিলিতে কাজ করবার সুযোগ পাবেন।আর,  টা বাজতে বাজতেই আপনি প্রতিদিনের কাজে অনেকটাই এগিয়ে থাকবেন
তবে আপনার জন্য পারফেক্ট রুটিনটি একদিনেই তৈরি হবে না। আপনি কয়েকদিন ভিন্ন ভিন্ন তালিকা অনুসরণ করার পর বুঝতে পারবেন, আপনার জন্য  কোন কর্ম তালিকাটি সবচেয়ে উপযোগী। এর জন্য আপনাকে কিছুদিন পরিশ্রম করতে হবে। তবে একবার যদি আপনি আপনার জন্য উপযোগী সবচেয়ে ভালো রুটিনটি  তৈরি করে ফেলতে পারেন এবং তা অনুসরণ করতে পারেন,  তবে আপনি খেয়াল করবেন যে আপনার কাজের গতি কয়েগুণ বেড়ে গিয়েছ!

. সোশিয়াল মিডিয়া এবং মেইল এর জন্য দিনে দুইটা সময় নির্ধারণ করুন 


facebook


এখন যেই বিষয়টা আলোচনা করব, এই ব্যাপারটা মেনে চলতে পারলে আমাদের অনেক মানুষের কাজের গতি কয়েকগুণ বেড়ে যাবে। কারণ দেখা গিয়েছে এই যুগে সোশিয়াল মিডিয়া গুলো মানুষ এর গুরুত্বপূর্ণ সময়ের বড় একটা অংশ নষ্ট করে ফেলছে। কাজের গতিও কমিয়ে দিচ্ছে।

সবচেয়ে ভালো হয় মোবাইলে  ফেসবুক , ইন্সটাগ্রাম ইত্যাদির এপ্লিকেশন গুলো ব্যবহার না করা। কারণ এগুলো সারাক্ষণ আপনাকে নতুন নতুন নোটিফিকেশন গুলো জানাতে থাকবে ।আর, 
আপনি যদি আপনার প্রতিটা নোটিফিকেশন তখনই  চেক করেন বা একটুক্ষণ পর পর  মেইল চেক করেন অথবা প্রতিটি মেইল এর উত্তর দেবার চেষ্টা করেন তবে অনেক সময় অপচয় হবে।

এজন্য দিনের দুইটা নির্দিষ্ট সময় রাখুন ।ঐ নির্দিষ্ট সময় ছাড়া অন্য সময় ভুলেও ফেসবুক বা জিমেইল খুলবেন না। সোশিয়াল মিডিয়াতে কতক্ষণ সময় কাটাবেন তা নির্দিষ্ট করুন। নির্দিস্ট সময় পর সেখান থেকে বের হয়ে আসুন।
তবে কিছু কিছু মেইল আছে যেগুলো খুব গুরতবপুর্ন। দ্রুত  তখনই উত্তর  দিতে হয়। সেক্ষেত্রে এই নিয়মের ব্যতিক্রম হবে।


.কি কি কাজ আছে তার একটি to do list তৈরি করুন।



to do list


             আপনাকে সারাদিনে  কি কি কাজ করতে হবে তার একটি to do list তৈরি করুন।  তবে এটা সবচেয়ে কার্যকর হবে, যখন  লিস্ট টি সবসময়  আপনার চোখের সামনে থাকবে।
ঘরে বা অফিসে আপনার ডেস্কে একটি বোর্ড টানাতে পারেন।বিভিন্ন রকম আঠা যুক্ত কাগজ পাওয়া যায়।  এগুলোতে কাজের কথা লিখে বোর্ডে লাগাতে পারেন। একটা করে কাজ শেষ  হবে এবং একটা করে কাগজ খুলে ফেলবেন। অথবা সাদা বোর্ডে  মার্কার পেন দিয়েও লিখতে পারেন। কাজটি শেষ হলে তা মুছে ফেলুন।

       এর সুবিধা হচ্ছে সবসময় কাজের লিস্ট টা চোখের সামনে থাকলে আপনি বুঝতে পারবেন কয়টা কাজ বাকি আছে। সেইসাথে আপনি মানসিক ভাবে প্রস্তুত থাকবেন যে কোন কাজটির পর কোন কাজটি করতে হবে। এটা আপনার কাজের গতি অনেক বাড়িয়ে দিবে।সেই সাথে গুরত্ব পুর্ন কাজগুলো আর কখনই ভুলে যাবেন না।
এছাড়া একটা  কাজ শেষ করে তা মুছে ফেলার মধ্যমে আপনি মানসিক তৃপ্তি পাবেন। ফলে বাকি কাজ গুলো দ্রুত শেষ করে ,সে কাজটি মুছে ফেলতে ইচ্ছে করবে।যা আপনার কাজের গতি বাড়িয়ে দিবে।

. আগের রাতেই পরের দিনের জন্য কাজের জায়গাটি  গুছিয়ে রাখুন-


কাজের জায়গাটি  গুছিয়ে


আপনার কাজ করার জায়গাটি যদি অগোছালো থাকে তবে তা আপনার কাজের গতি অনেক কমিয়ে দিবে। সেটা হতে পারে আপনার অফিসের ডেস্ক, অথবা রান্নাঘর।
আপনার কাজের জিনিসগুলো যদি গুছিয়ে না রাখেন তবে আপনার একটা লম্বা সময় চলে আপনার জিনিসগুলো খুঁজে বের করতে।আর গোছানর কাজটি যদি প্রতিদিন না করেন তবে, কয়েক দিনের কাজ জমে তা আরো খারাপ আকার ধারণ করবে।
সুতরাং, দিন শেষে পাঁচটা মিনিট সময় ব্যায় করুন আপনার ডেস্ক বা কাজের জায়গাটি গোছাতে। দেখবেন পরের দিন গোছান ডেস্কে বা গোছান রান্নাঘরে কাজ শুরু করতে কত ভালো লাগছে।
এই বুদ্ধিটা কিন্তু আপনার ভার্চুয়াল কাজের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। আপনার ফাইল, গুরুত্ব পূর্ণ ডকুমেন্ট যদি আপনি এদিক সেদিক ছড়িয়ে রাখেন তবে তা আপনার কাজ কে করবে অনেক ধীর। এছাড়া কম্পিউটারে রাখা ফাইল বা ডকুমেন্ট যদি এলোমেলো থাকে ,তবে কাজের সময় তা খুঁজে পেতেই একটা বড় সময় চলে যাবে।
এজন্য দিন শেষে মিনিট সময় রাখুন পরের দিনের জন্য কাজের জায়গাটিকে গোছাতে।

উপরের নিয়মগুলো মেনে চলুন! আর বাড়িয়ে নিন আপনার কাজের গতি!!

.তিন বেলা ভর পেট নয়, ছয় বেলা অল্প করে খান।

আপনি  তখনই অনেক বেশি কাজ করতে পারবেন , যখন আপনি সুস্থ থাকবেন এবং আপনার শরীর সব সময় শক্তিশালী থাকবে। দুর্বল শরীর নিয়ে কখনই অনেক বেশি কাজ করা সম্ভব নয়। আর, শক্তিশালী শরীরের জন্য প্রয়োজন সঠিক খাদ্যাভাস। 

আমাদের তিন বেলা ভরপেটে খাবারের রুটিন  আমাদের কাজের গতি অনেক কমিয়ে দেয়। প্রথমত লম্বা সময় না খেয়ে থাকলে আপনার শরীরে এনার্জির ঘাটতি দেখা দেয় আবার অনেক ক্ষণ ক্ষুধার্ত থাকার পর হঠাৎ  করে বেশি খেয়ে ফেললে সেটাও আপনার শরীর কে কর্ম ক্ষম অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে সময় নেয়। এজন্য আপনার প্রতিদিনের খাবার কে ছোট ছোট ছয়টা অংশে ভাগ করুন। 
এতে আপনি কখনও  বেশি ক্ষুধার্ত থাকবেন না, আবার অনেক বেশিও খেয়েও  ফেলবেন না। এতে কাজ করার জন্য আপনার কখনই শক্তির অভাব হবে না।



সুতরাং, উপরের নিয়মগুলো মেনে চলুন আর ঝড়ের গতিতে কাজ করে সবাইকে চমকে দিন।

আরো পড়ুন-


  • http://tukitakitipsbd.blogspot.com/2018/05/7-ways-how-to-make-positive-attitude.html
৭ টি পদ্ধতিতে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরির উপায়!


No comments

Powered by Blogger.