কিভাবে বন্ধু বানাবেন?(How to make friend)


friends


ছোটবেলা থেকে শুরু করে জীবনের বিভিন্ন সময়, বিভিন্ন জায়গায় আমরাদের বিভিন্ন মানুষের সাথে দেখা হয়। যাদের সাথে আমাদের আন্তরিকতা তৈরি হয়, তাদের কে বলা হয় বন্ধু। এরা আমাদের হৃদয়ে এক বিশেষ স্থান দখল করে নেয়। বন্ধুরাও আমাদের এক ধরনের পরিবার। তবে পরিবারের এই সদস্য গুলো আমরা নিজেরা পছন্দ করে নিতে পারি
জীবনে বন্ধু থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ন। আপনি যদি জীবনে ভালো কিছু বন্ধু তৈরি করতে পারেন তবে আপনার জীবনটা অনেক সহজ হয়ে যাবে। সেই সাথে আনন্দ, দুঃখ, কষ্ট ভাগাভাগি করে নেওয়া যায় বলে ভালো বন্ধুত্ব আমাদের মানসিক শারীরিক অবস্থা ভালো রাখতেও সাহায্য করে।
 তবে সবার পক্ষে বন্ধু তৈরি করা সহজ নয়। বিশেষ করে লাজুক, অন্তর্মুখী চরিত্রের মানুষ রা সহজে অন্য মানুষদের সাথে মিশতে পারে না এবং বন্ধু তৈরি করতে পারে না।

আজকে তাদের জন্যই  লেখা। নিজের ব্যক্তিত্বের কিছু পরিবর্তন কৌশল অবলম্বন করে তারা সহজেই বন্ধু তৈরি করতে পারবেন-


. নিজেকে ভালবাসুন

love myself


খুব অবাক লাগছে তাইনা? বন্ধু তৈরির জন্য কেন নিজেকে ভালবাসতে হবে। হ্যাঁ , ঠিকই বলছি। আগে নিজেকে ভালবাসুন। কারণ বন্ধু তৈরির ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাঁধা হিসেবে কাজ করে নিজেকে নিয়ে হীনমন্যতা।
মনে রাখতে হবে বন্ধু তৈরি করার পূর্বে নিজেকে চিনতে হবে। আমরা নতুন জায়গায় গেলে অনেক সময় বন্ধু তৈরি করার জন্য অস্থির হয়ে যাই। নিজের অনেক কিছু লুকিয়ে, নিজেকে পরিবর্তন করে বন্ধুত্ব করতে চাই। কিন্তু মনে রাখবেন বানানো জিনিস বেশি দিন টিকে না। নিজের পরিবার, অতীত, সৌন্দর্য  নিয়ে গর্ব করুন (তবে অবশ্যই অহংকার নয়) মানুষ অনেক সময় দ্রুত বন্ধুত্ব করার জন্য নিজে যা নয় তা বানিয়ে বানিয়ে বলে বা করে। ভুলটা কখনই করবেন না। কারণ মিথ্যা বিষয় কখনই মানুষ কে আকর্ষণ করবে না।


. নি:স্বার্থ এবং উদার হবার চেষ্টা করুন

পৃথিবীর সবাই উদার, ভালো মনের এবং নি:স্বার্থ একজন বন্ধু চায়। সুতরাং আপনি যদি শুধু এই গুনটা ধারণ করতে পারেন আপনার বন্ধুর অভাব হবে না। সবসময় উপকার করার জন্য নিজেকে তৈরি রাখুন। তবে অবশ্যই মনে রাখবেন, নিজের ক্ষতি করে কোন উপকার করবেন না। উপকারের কোন বিনিময় আশা করবেন। আর যেটা আপনার সামর্থ্য এর বাইরে সেটা সুন্দর ভাবে না বলুন।দীর্ঘস্থায়ী বন্ধুত্বের জন্য এটা প্রয়োজন।


.নিজেকে একজন খোলা মনের মানুষ হিসেবে তৈরি করুন-

মানুষ সাধারণত খোলা মনের মানুষ দের সাথে মিশতে পছন্দ করে। বন্ধুদের সাথে বাইরে গেলে হাসিখুশি থাকুন। তাদেরকে আনন্দ দেবার চেষ্টা করুন। আগ বাড়িয়ে আলাপ জমান। তবে নিজের ব্যক্তিত্ব বজায় রাখুন। এবং আলাপের বিষয়টা যেন হয় প্রাসঙ্গিক। বন্ধুদের সাথে মজার খেলা বা প্রতিযোগিতায় অংশ নিন। নতুন জায়গায় বেড়াতে যাবার পরিকল্পনা করুন।


. সব কিছু সহজ ভাবে নিন-

বন্ধু আপনার মতামতের মূল্য দিল না? আপনার পরিকল্পনা ব্যর্থ করে দিল, বা আপনার এমন কোন বিষয় মজা করল যাতে আপনি কষ্ট পান। সেক্ষেত্রে, সব কিছু সহজ ভাবে নিন। প্রতিক্রিয়া দেখাবেন না। বরং ছোট ছোট ফান, খোঁচাখুঁচি উপভোগ করুন। এই বিষয়গুলো একটি শক্তিশালী বন্ধুত্ব তৈরি করে ।কারন ছোট খাট বিসয়গুলো ছাড় দিতে না পারলে বন্ধুত্ব কেন কোন সম্পর্কই বেশি দিন টিকবে না।  তবে,  খুব সিরিয়াস বিষয় হলে বন্ধুকে আলাদা করে বুঝিয়ে বলুন।



.প্রতিটা মুহূর্তকে সর্বোচ্চ উপভোগ করুন

enjoy

জীবন টা খুব ছোট। তাই বন্ধুদের সাথে সময়টাকে সর্বোচ্চ আনন্দময় করে তুলুন। মানুষ তাদের সাথে বেশি বন্ধুত্ব বেশি করতে চায় যারা জীবনকে উপভোগ করে। সারাটাক্ষন অন্যকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করে, গোমরা মুখো থাকে, হতাশা মূলক কথা বলে- এমন মানুষের সাথে কেও দীর্ঘস্থায়ী বন্ধুত্ব রাখে না।

৫। সৎ হতে গিয়ে নিষ্ঠুর হবেন না-

অনেকেই বন্ধুকে সৎ পরামর্শ দিতে গিয়ে মনে কষ্ট দিয়ে ফেলে। এক্ষেত্রে কিন্তু কৌশলী হতে হবে। অবশ্যই বন্ধুর ভালোর জন্য সৎ এবং সুন্দর পরামর্শ দিবেন। সুন্দর ভাষায় বুঝিয়ে বলতে হবে। অযথা বা অপ্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া থেকে বিরত থাকুন। যেমন,  তোকে এই পোশাকটিতে একদম ভালো লাগছে নাবাতোর মাথায় বুদ্ধি এত কম কেন?”  কারো দুর্বলতা নিয়ে মজা বা ঠাট্টা করবেন না।  মানুষ বেশি মন্তব্য করা মানুষের সাথে বেশি সময় কাটাতে চায় না।
কোন কারণে বন্ধুকে মনে কষ্ট দিয়ে ফেললে ক্ষমা চেয়ে নিন। অনেকেই বলে , বন্ধুত্বে No sorry , no thank you. তবে কথাটি ঠিক নয়। বন্ধুর সাথে লম্বা সময়ে ভুল হতেই পারে। সেজন্য অবশ্যই ক্ষমা চেয়ে নেবেন। আর ভালো কাজের প্রশংসা করবেন। এটি বন্ধুত্ব কে দীর্ঘস্থায়ী করবে।



৬। মনযোগী শ্রোতা হন-

listen carefully
বন্ধুর কথা মনোযোগ দিয়ে শুনুন

সবাই এমন একজন বন্ধু খুঁজে যে তার সুখ-দুঃখের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনবে। আমাদের বেশিরভাগ মানুষের শোনার ধৈর্য কম। এই গুনটা অর্জন করার চেষ্টা করুন দেখবেন আপনার বন্ধুর অভাব হবে না।
তবে এক্ষেত্রে কিন্তু আপনার দায়িত্ব বেড়ে যাবে। বন্ধুর গোপন কথা অন্যকে বলবেন না বা তার আড়ালে হাসিঠাট্টা করবেন না। বন্ধুর কাছে নিজের বিশ্বাসযোগ্যতা প্রমাণ করুন।

৭। নিজেকে গড়ে তুলুন-

learn

প্রতিনিয়ত পত্রিকা,ব্লগ, বই পড়ে নিজেকে এক অনন্য ব্যক্তিতে রূপান্তর করুন মানুষ জ্ঞানী মানুষকে নিজের বন্ধু হিসেবে দেখতে পছন্দ করে। বিভিন্ন সামাজিক কাজে নিজেকে নিয়োজিত করুন।  দেখবেন বিভিন্ন শ্রেণীর বন্ধু পেয়ে যাবেন। 

উপরের পরামর্শগুলো মেনে চলুন, আর জীবন কে উপভোগ করুন বন্ধুর সাথে।


আরো পড়ুন-


৭ টি উপায়ে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরির উপায়!(How to make positive attitude?

1 comment:

Powered by Blogger.