সুপ্রিম কোর্টের কজ লিস্ট, আদেশ এখন এক ক্লিকেই!!
প্রযুক্তির
ছোঁয়ায় আমাদের প্রতিদিনের জীবন অনেক সহজ হয়ে গিয়েছে। যে কোন তথ্য
এখন এক
নিমিষেই চলে
আসে আমাদের হাতের মধ্যে। দেশের এক গুরুত্ব
পূর্ণ প্রতিষ্ঠান হচ্ছে বিচার বিভাগ। বিচার বিভাগে প্রতিদিনের কাজ পরিচালনার জন্য প্রয়োজন প্রচুর তথ্য। এজন্য বাংলাদেশের বিচার বিভাগেও লেগেছে প্রযুক্তির হাওয়া । যে কাজের
জন্য আগে দালাল কে টাকা দেবার
প্রয়োজন পরত, সময় ও লাগত অনেক
বেশি। সে কাজ এখন
অনেকটাই সহজ হয়ে গিয়েছে। কমে যাচ্ছে সময়, শ্রম ,অর্থ এবং ভোগান্তি।
বিচার
বিভাগ এবং আইন মন্ত্রণালয়ের যৌথ প্রচেষ্টায় ‘ই-জুডিশিয়াল প্রকল্পের
কাজ চলছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে
সারা দেশের বিচার বিভাগকে পূর্নাংগ ডিজিটালাইয করা
হচ্ছে। সুপ্রিম কোর্টের
বিভিন্ন আদেশ , কজ লিস্ট থেকে শুরু করে বিচারকদের পরিচিতি ও
পাওয়া যাচ্ছে মোবাইল এপের মাধ্যমে । সুপ্রিম কোর্টের
পাশাপাশি অধস্তন আদালতগুলোতেও শুরু হয়েছে ডিজিটালাইজ করার কার্যক্রম।
আসুন
তাহলে জেনে নেই বিচার বিভাগে ব্যবহৃত প্রযুক্তিগুলো সম্পর্কে-
আইনজীবীদের
এখন কোর্টে মামলার কার্য তালিকা দেখতে মোটা মোটা বই সদৃশ কজ
লিস্ট সাথে রাখার প্রয়োজন পরে না। মোবাইল ফোনেই এখন পাওয়া যাচ্ছে কজলিস্ট। সুপ্রিম কোর্টে এখন কাগজের পাশা পাশি অনলাইনেও নিয়মিত ভাবে কার্য তালিকা প্রকাশ পাচ্ছে। এই
ওয়েব ঠিকানাটি হচ্ছে www.supremecourt.gov.bd.com । এই
ওয়েব ঠিকানা থেকেই কজ লিস্ট এপটিও
ডাউন লোড করা যাবে।
নিচের
লিঙ্ক দুটি থেকে যে কেও মামলার
কজ লিস্ট জানতে পারবে-
২। সংক্ষিপ্ত
আদেশ-
সুপ্রিম
কোর্টের ওয়েবসাইটের মাধ্যমেই এখন মামলার দৈনন্দিন কার্য তালিকা, সংক্ষিপ্ত আদেশ , মামলার সংক্ষিপ্ত ফলাফল,
সর্বশেষ আদেশ , রায় , আদেশ ও রায়ের অনুলিপি
প্রকাশ করা হচ্ছে। আগে মামলার তালিকা জানার জন্য দালালকে টাকা
দিতে হত। এখন
ওয়েবসাইটেই পাওয়া যাচ্ছে সংক্ষিপ্ত আদেশগুলো। মামলার সর্বশেষ আদেশ, জামিন আদেশ ও দেখা যায়
এখানে। ফলে দালাল টাওট দের প্রভাব অনেকটাই কমে যাওয়া শুরু হয়েছে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে।
নিচের
লিঙ্ক দুটোর মাধ্যমে হাই কোর্ট এবং আপিল বিভাগের আদেশ গুলো পাওয়া যাবে-
৩। সাক্ষীদের
জবানবন্দী নেওয়া হচ্ছে
ডিজিটালাইজ ডিভাইসের মাধ্যমে-
বিচার বিভাগের ডিজিটাইযেশন এর ক্ষেত্রে সবচেয়ে
উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হচ্ছে “ডিজিটাল এভিডেন্স রেকর্ডিং সিস্টেম” চালু। এই পদ্ধতিতে সাক্ষীর জবানবন্দী
ডিজিটাল ডিভাইসে সংগ্রহ করা হবে । ২০১৬
সালে সিলেটের ২০ টি আদালতে
সর্বপ্রথম পরীক্ষামূলক ভাবে ডিজিটাল এভিডেন্স রেকর্ডিং সিস্টেম চালু করা হয়। খুব দ্রুতই এটি সারা দেশে চালু করা হবে।
৪। বারান্দায়
মনিটর-
আগে
মামলার সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে জানতে ঝামেলায় পড়তে হত মানুষকে। এখন
ঢাকার নিম্ন আদালতের কয়েকটিতে বারান্দায় মনিটর বসান হয়েছে । ফলে আদালতের
বিচারের সর্ব শেষ অবস্থা সম্পর্কে জানতে পারছে আইনজীবী ও বিচার প্রার্থীরা
।
৫। সার্কুলার
সম্পর্কে জানা-
সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটটিতে এখন সুপ্রিম কোর্টের বিচারিক আদালতের জন্য দেওয়া সকল সার্কুলার পাওয়া যায়। ফলে সংশ্লিষ্ট আদালত সাথে সাথেই সার্কুলার সম্পর্কে জানতে পারছে। ফলে প্রচুর
সময় বেচে যাচ্ছে।
৭। সকল
বিচারপতিদের নামের তালিকা
ও ছুটির অনুমোদন
এখন অনলাইনে-
প্রধান
বিচারপতি সহ অন্যান্য বিচারপতিদের
নামের তালিকা, বিচার পতিদের সংক্ষিপ্ত বায়োগ্রাফি, সুপ্রিমকোর্টে
কর্মরত বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের নামের তালিকা,কেস সার্চ, বাংলাদেশের বিচার বিভাগের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস,
বিভিন্ন নোটিশ ও নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিও
পাওয়া যায় এখানে।
এছাড়া,
আগে চিঠি বা ফ্যাক্সের মাধ্যমে
বিচারকরা ছুটি নিত। এতে বিচারকদের অনেক ভোগান্তি হত। এখন
আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে অনলাইনেই ছুটি নিতে পারেন নিম্ন আদালতের বিচারকরা।
৮। জামিন
আদেশ যাচাই করা
হয় অনলাইনে-
নিয়ম অনুযায়ী হাইকোর্টে কোন আসামির জামিন মনজুর হলে
ঐ আদেশ যায় সংশ্লিষ্ট বিচারিক আদালতে। বিচারিক আদালত থেকে জামিনের চূড়ান্ত অনুমোদন হয়ে তা যায় কারাগারে।
তবে চূড়ান্ত অনুমোদনের পূর্বে জালিয়াতি রোধ করবার জন্য হাই কোর্টের জামিন আদেশ যাচাই করে নিত বিচারিক আদালত। আর
এই জামিন আদেশ যাচাই করার জন্য বিচারিক আদালত থেকে উচ্চ আদালতের সংশ্লিষ্ট থানায় ফোন করা হত। ফলে
বিচার প্রার্থীদের হতে হত ভোগান্তির শিকার।
তবে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে এখন অনলাইনেই জামিন আদেশ যাচাই করা হয়।
৯। ভিডিও কনফারেন্সে
বিচারকার্য পরিচালনা-
শীর্ষ
সন্ত্রাসীদের ভিডিও কনফারেন্স এর মাধ্যমে বিচার
কার্য পরিচালনা করার পদক্ষেপ নেয়ে হচ্ছে। এ পদ্ধতি চালু
করা হলে স্পর্শকাতর সন্ত্রাসীদের ঝুঁকি নিয়ে আদালতে আনা নেওয়া করতে হবে না। ভিডিও কনফারেন্স এর মাধ্যমেই সন্ত্রাসীর
বিচার কার্য পরিচালনা করা হবে।
১০। শিশু
আদালতের
জন্য
ড্যাশবোর্ডঃ
শিশু
আদালতের জন্য ড্যাশ বোর্ড তৈরির কাজ চলছে। এর ফলে আদালতে
মামলা ও আদেশ সম্পর্কে
বিচার প্রার্থীরা দ্রুত জানতে পারবে। সুপ্রিম
কোর্টের বিশেষ কমিটি এবং চাইল্ড রাইটার্স যৌথ ভাবে এই কাজটি করছে
।
আইনজীবী ও বিচার প্রার্থীদের জন্য একটি গুরুত্বপুর্ন বিষয়
হচ্ছে কোর্ট ক্যলেন্ডার । এখন , সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটটিতেই পাওয়া যাচ্ছে কোর্ট
ক্যালেন্ডার।
বিচার বিভাগে শুরু হয়েছে নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার । আশা করা
যায় দ্রুত বিচার পাওয়া এখন অনেক বেশি সহজ
হবে। বিচারপ্রার্থীদের হয়রানিও কমে যাবে অনেকটাই।
How to find our PVT. Company case File?
ReplyDelete